প্রান্তজনের কণ্ঠস্বর: বাংলাদেশে করোনার অভিজ্ঞতা

Voices from the Margins: Covid-19 Experiences in Bangladesh

করোনাকালে ৩৪ ভাগ মানুষ ঋণ নিয়ে টিকে ছিল

April 3rd 2022

...

করোনাকালে আর্থিক সংকটের মধ্যে টিকে থাকতে ৩৪ শতাংশ মানুষ ঋণ নিয়েছে বলে
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের (সিপিজে) এক গবেষণা জরিপে উঠে এসেছে। সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সিপিজে উপস্থাপিত ‘করোনার অতিমারিতে অর্ন্তভুক্তিমূলক নীতিমালা প্রণয়নে প্রান্তজনের কণ্ঠস্বর’ শিরোনামের গবেষণা জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঋণের টাকার এক-তৃতীয়াংশ খাদ্যপণ্য কেনাকাটায়, এক-চতুর্থাংশ আগের ঋণ পরিশোধে এবং কিছু অংশ ওষুধ কেনা ও চিকিৎসার খরচ চালানোর কাজের জন্য খরচ করা হয়েছে। ঋণ নেয়ার উৎস হচ্ছে মহাজন, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব। ঋণের পাশাপাশি কম খেয়ে, জমা টাকা থেকে ব্যয় করে এবং কম টাকায় শ্রমে যুক্ত হয়ে টিকে থাকার লড়াই চালিয়েছেন প্রান্তিক মানুষ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়। গত বছরের জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বরে তিন দফায় ২০টি জেলার ৪০টি উপজেলার দেড় হাজার পরিবারের ওপর এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে সহযোগিতা করে বৃটিশ সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এবং ইনস্টটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের কোভিড কালেকটিভ।

অনুষ্ঠানে জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিজে’র জ্যেষ্ঠ গবেষক মৃন্ময় সমাদ্দার, গবেষণা সহযোগী নাহিদা আক্তার এবং হোসেইন মোহাম্মদ ওমর খৈয়াম। কোভিড-১৯ সম্পর্কে জ্ঞান, সচেতনতা ও আচরণ; টিকার বিস্তৃতি; অভিঘাত ও নাজুক পরিস্থিতি; সংকট মোকাবিলায় কৌশল; রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ এবং সামাজিক সংহতি-এই ছয় বিষয়ের ওপর জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিজে’র গবেষণা ফেলো মো. শহিদুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋণ নেয়ার পরিমাণ ধাপে ধাপে কমেছে। ঋণ নেয়ার হার জুনে ৬৬ শতাংশ ও সেপ্টেম্বরে ৪৯ শতাংশ ছিল। ডিসেম্বরে তা নেমে এসেছে ৩৪ শতাংশে।

ঋণের বিষয়ে সিপিজে’র গবেষণা সহযোগী নাহিদা আক্তার বলেন, ঋণ নেয়ার হার কমেছে অর্থ এই নয় যে, ওই ব্যক্তিদের আর্থিক অবস্থা ভালো হয়ে গেছে। অনেকে আগের ঋণ শোধ করতে পারেননি। তাই নতুন করে ঋণ নেয়ার সক্ষমতা হারিয়েছেন। কাজের অভিজ্ঞতার তথ্য তুলে ধরে বলেন, রাজধানীর এক বয়স্ক বস্তিবাসী নারী তাকে জানিয়েছিলেন, দুই মেয়ে পোশাকশিল্প কারখানায় কাজ করেন। মেয়েদের বেতন না বাড়ায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছেন না। দুই বেলা খাবার খান। একজনের কাছ থেকে নেয়া ঋণের ২০০ টাকা বাকি আছে। সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় ভোগেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সিপিজে’র নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান বলেন, কোভিড প্রান্তিক মানুষের ওপর আর্থ-সামাজিক নানাভাবে প্রভাব ফেলেছে।